অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুই দশক পর কী হতে পারে- তা মাথায় রেখে শহর বা অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। আজ বুধবার নিজ কার্যালয়ে নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন পরিকল্পনা সংক্রান্ত সভায় কিছু হলেই রাজধানীতে ছুটে আসার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে হলে আমাদের ক্ষমতাকে আরও বিকেন্দ্রীকরণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া। তার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকে স্থানীয় সরকারগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। শেখ হাসিনা বলেন, এখন অনেক শহর এমন উন্নত হয়ে গেছে যে, ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছে, বাইপাস করতে হচ্ছে। এসব চিন্তা-ভাবনা আমাদের পূর্ব থেকেই করা উচিৎ। ২০ বছর, ২৫ বছর পরে কী হবে সেটা মাথায় রেখেই আমাদের প্রত্যেকটা পরিকল্পনা নেওয়া উচিৎ বলে মনে করি। এটা আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, যখনই আমরা যে পরিকল্পনা নেব, এটা মাথায় রাখবেন যে, আজ থেকে বিশ বছর পর কতটা উন্নতি হতে পারে, জনসংখ্যা কতটা হবে এবং কী হতে পারে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে- সে কথা মাথায় রেখেই কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা নেওয়া উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর মানসিকতা ত্যাগ করে চিন্তাটাকে সবসময় আরও স্বচ্ছ, সুদূরপ্রসারী করতে হবে। তাহলে পরবর্তীতে ঝামেলাগুলি কম হবে। এক্ষেত্রে চীন কীভাবে কাজ করেছে সে দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। এই দূরদৃষ্টিটা তাদের (চীনাদের) আছে। অর্থাৎ যে কোনো পরিকল্পনা নিতে গেলে আমাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ও উন্নয়নের সুবিধা তৃণমূলে নিয়ে যেতে নতুন নতুন বিভাগ সৃষ্টির কথাও উল্লেখ করেন। দেশে বর্তমানে আটটি বিভাগ রয়েছে। আরও বিভাগ করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ঢাকা বিভাগকে ভেঙে ময়মনসিংহ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পরিকল্পনা আছে ঢাকা বিভাগটাকে আরেকটু ছোট করে দেওয়া। স্থানীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী করার আগ্রহের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো একটা কিছু হলেই ঢাকা ছুটে আসতে হবে। এভাবে তো মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করা যাবে না। এজন্য ক্ষমতাটাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিতভাবে না করলে আগুন লাগলে নেভানোর পানি কোথায় পাব? একটা দৃষ্টান্ত দেই। বসুন্ধরায় যখন আগুন লাগলো পানি পাওয়া যাচ্ছিল না আগুন নেভাবার। পানি নিতে হল সোনারগাঁও হোটেলের সুইমিংপুল থেকে। তাহলে কি আমাদের ভবিষ্যৎ সুইমিংপুলেই আটকে থাকবে? অথচ পান্থপথে একটা খাল ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটাকে বক্স কালভার্ট করে খালটাকে বন্ধ করে দিয়ে ওই এলাকার পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে গেছে। ধানমণ্ডি লেক থেকে হাতিরঝিল হয়ে সোজা নদী পর্যন্ত সংযোগ ছিল।
0 comments