গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগরে ১৬ জেলেসহ এফবি অভি ও এফবি ভাইবোন নামের দুই ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। আজ বুধবার ভোররাতে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের আলোরকোল এলাকায় প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার দুটি নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ ট্রলার ও জেলেদের সন্ধানে জেলা ট্রলার মালিক সমিতির উদ্যোগে একটি ট্রলার পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ডুবে যাওয়া টলার এফবি অভি থেকে উদ্ধার হওয়া জেলে হারিছ (২৫) জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে সাগরের প্রচণ্ডতা বেড়ে যায়। একই সময় পুবালি ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকলে ঢেউয়ের তোড়ে ভারতের সমুদ্রসীমায় ঢুকে পড়ে তাদের ট্রলারটি। ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশনাল জটিলতার ভয়ে তারা পুনরায় বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেও বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ফেরার চেষ্টা করেন। এ সময় প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে তাদের ট্রলারটির ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। ইঞ্জিন বিকল হওয়ার পর তারা ট্রলার নিয়ে দীর্ঘ সময় উত্তাল সাগরে ভেসে থাকেন। এ সময় এফবি মায়ের দোয়া নামে আরেকটি ট্রলার তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক চেষ্টা করে তিনিসহ ৯ জেলে ওই ট্রলারে উঠে আসতে সক্ষম হন। বাকি আট জেলে আর উঠে আসতে পারেননি। তিনি জানান, সাগরের ঢেউয়ের প্রচণ্ডতা এত বেশি ছিল যে মায়ের দোয়া ট্রলারটি তাদের ট্রলারের পাশে কিছুতেই ভিড়তে পারেনি। জীবন রক্ষার তাগিদে তারা ৯ জনই সাগরে লাফিয়ে পড়লে অপর ট্রলারের জেলেরা দড়ি ফেলে তাদের ট্রলারে তোলেন। হারিছ আরো জানান, তারা যখন ফিরে আসেন তখন আট জেলেসহ তাদের ট্রলারটিকে (এফবি অভি) ধীরে ধীরে তলিয়ে যেতে দেখেন। তিনি জানান, প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে তারা আর পেছনে ফিরতে সাহস পাননি। এফবি অভি ট্রলারে থাকা ১৭ জেলের মধ্যে ৯ জনকে পার্শ্ববর্তী মায়ের দোয়া নামের একটি ট্রলার উদ্ধার করলেও বাকি আটজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের মধ্যে সেলিম মাঝি (৫৫), মিলন (৩০), হাসান (৪০), হামেস (৫৫), আবুল (৫০) মালেক (৪০), পনু (৫০) এবং নান্নার (৪০) নাম জানা গেছে। তাদের সবার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এফবি ভাইবোন নামে অপর একটি ট্রলার আরো আটজন জেলে নিয়ে নিখোঁজ রয়েছে। তিনি জানান, এফবি অভি ও এফবি ভাইবোন নামের দুটি ট্রলার মোট ১৬ জন জেলে নিয়ে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এদিকে, গভীর নিন্মচাপের প্রভাবে বরগুনার প্রধান দুটি নদী বিষখালী ও পায়রায় বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে জেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে জেলা শহরের একাধিক সড়ক। জোয়ারের সময় ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় বরগুনা-আমতলী-ঢাকা এবং বরগুনা- খুলনা রুটের দুটি ফেরি তিন ঘণ্টা ধরে বন্ধ থাকে। কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গভীর নিম্নচাপটি উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশেও তিনটি সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। - See more at: http://www.kalerkantho.com/online/country-news/2016/08/17/394560#sthash.1LhWO0PR.dpuf
No comments:
Post a Comment